নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লার লালমাই উপজেলার ভাবকপাড়া রাজবাড়িতে প্রবাসফেরত এক ভাইকে মারধর করে মাদকাসক্ত সাজিয়ে জোরপূর্বক পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে তারই বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে। বিষয়টি ঘিরে পুলিশি ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয়দের মধ্যে।
জানা গেছে, ভুক্তভোগী সোলেমান হোসেন সুমন (৪২) দীর্ঘ ১৭ বছর প্রবাসে কাটিয়ে দেশে ফিরে সংসার শুরু করেন। তিনি চার ভাইয়ের মধ্যে ছোট এবং বড় ভাই মোস্তফা কামাল দুলালের (৫০) অধীনে প্রবাসকালীন উপার্জিত অর্থ দেশে পাঠিয়ে পারিবারিক খরচ চালিয়েছেন।
সুমনের অভিযোগ, সেই অর্থের হিসাব চাওয়াকে কেন্দ্র করে বড় ভাইয়ের সঙ্গে তার বিরোধ শুরু হয়। এরপর ১০ জুন রাতে পরিকল্পিতভাবে দুলাল, তার ছেলে ও ভাতিজাসহ ৮-১০ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সুমনের ওপর হামলা চালায়। তাকে চাপাতি, হকিস্টিক ও ক্রিজ দিয়ে মারধর করে গুরুতর জখম করা হয়। মাথায় আঘাতে জ্ঞান হারালে সুমনকে তালাবদ্ধ করে রাখা হয় বাড়ির ভিতরে।
পরবর্তীতে দুলাল নিজেই ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে জানান, সুমন নেশাগ্রস্ত হয়ে নিজেই আহত হয়েছেন। লালমাই থানার এসআই জোনাব আলী ঘটনাস্থলে গিয়ে সুমনকে উদ্ধার করলেও, অভিযোগ রয়েছে তিনি হামলার ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে সুমনকে মাদকাসক্ত হিসেবে তুলে ধরেন।
পরে সুমনকে লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে “যত্নের মায়া” নামক একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। তথাকথিত ঐ পুনর্বাসন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অর্থ লেনদেনের অভিযোগও তুলেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোস্তফা কামাল দুলাল জানান, সুমন প্রায়ই বাড়িতে পাগলামি করত। কাঠ-খরকুটো দিয়ে উঠোনে আগুন ধরিয়ে দিতো। ঐদিন কে-বা কারা তাকে মেরেছে আমি জানিনা।
সুমনের স্ত্রী জানান, ঘটনার দিন রাত ৮টায় স্বামীর সঙ্গে শেষবার কথা হয়েছিল। পরদিন থেকে ফোন বন্ধ পান। ১২ জুন স্বামীর খোঁজে বাড়িতে গিয়ে কোনো তথ্য না পেয়ে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। একজন প্রবাসফেরত নাগরিককে মাদকাসক্ত সাজিয়ে আটকে রাখার মতো ঘটনায় পুলিশের নিরপেক্ষতা ও দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ভুক্তভোগীর পরিবার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের বিচার দাবি করেছে।
এ বিষয়ে লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, বিষয়টি হৃদয়বিদারক। ভুক্তভোগী অভিযোগ দিলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
.jpg)
