নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লার লাকসামে একদিনে পৃথক স্থানে দুটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। রোববার সকালে উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়নের আমুদা এবং রাতে পৌরসভার মিশ্রী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার বিকেলে নিজ নিজ গ্রামে নিহতের দাফন করা হয়।
রোববার (২৭ অক্টোবর) রাত ১১টায় লাকসাম পৌরসভার মিশ্রী গ্রামে মোঃ মোখলেসুর রহমান (৫৮) নামে একজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, একই গ্রামের হকার সুজন (৩০) ও বিডিআর মানিকের বাসার ভাড়াটিয়া মোখলেছুর রহমানের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সুজন তাকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। তাৎক্ষণিক মোখলেসুর রহমানকে লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, নিহত মোখলেসুর রহমানের বাড়ি সিলেটে। তিনি ওই গ্রামের বিডিআর মানিকের বাসায় ভাড়া থাকতেন।
একই দিন সকাল দশটায় উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়নের আমুদা গ্রামে প্রতিবেশীর ঘুষিতে শহীদ উল্ল্যা সরু (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হন। নিহত সরু ওই গ্রামের আলী মিয়া দরবেশের পুরান বাড়ির মৃত ছৈয়দ আহমদের ছেলে।
নিহতের ভাতিজা আমানুল্লাহ জানান, সকাল দশটার দিকে পার্শ্ববর্তী বাড়ির শহিদুল্লাহ ড্রাইভার আমাদের জায়গা থেকে মাটি কেটে তাদের বাড়ির রাস্তায় ফেলছিল। এ সময় আমি বাধা দিলে তারা আমাকে তেড়ে আসে। পরে সরু চাচাকে খবর দিলে চাচীসহ তারা ঘটনাস্থলে এলে শহিদুল ইসলাম ড্রাইভার (৫৩) ও তার ছেলে তাজুল ইসলাম (২৯)সহ ১০/১২ জন নারী-পুরুষ তেড়ে এসে চাচিকে ধাক্কা দেয় এবং সরু চাচাকে কিলঘুসি ও লাথি মারে। এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে সরু চাচা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে লাকসাম সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ছেলে আব্দুল কাদের জানান, ওই জমি নিয়ে শহীদদের সাথে আমাদের বিরোধ ছিল। আমরা শহীদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে ৮০ বছর আগে এই জায়গা কিনেছি। কিন্তু তারা নিজের বলে দাবি করছে।
এদিকে, অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম ড্রাইভার বলেন, এটা আমাদের পৈতৃক জায়গা। বন্যায় বাড়ির রাস্তা গর্ত হয়ে মাটি সরে ওই জায়গায় জমা হয়। আমরা সামান্য মাটি কেটে রাস্তায় ফেলেছি। এ নিয়ে তারা বাধা দিলে সামান্য কথা কাটাকাটি এবং হাতাহাতি হয়। শহীদ উল্ল্যা সরু হার্টের রোগী ছিলেন। তার হার্টে রিং পরানো ছিল। হার্ট অ্যাটাক করেই তার মৃত্যু হতে পারে। আমরা তাকে মারধর করিনি।
লাকসাম থানার ওসি নাজনীন সুলতানা জানান, রাতে মিশ্রী গ্রামে মোখলেসুর রহমান নিহতের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হকার সুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর সকালে আমুদা গ্রামে শহীদ উল্ল্যা সরু নিহতের ঘটনায় ৮ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। মামলার আসামি তাজুল ইসলাম ও তার পিতা শহিদুল ইসলাম ড্রাইভারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের পর লাশ দুটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।