নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার রায় গোবিন্দপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামে কৃষিজমিতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে গভীর খাদ সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ব্যক্তি নাজমুল হক, ঐ গ্রামের সর্দার ও গোবিন্দপুর ইউনিয়নের সাবেক আওয়ামী লীগ সভাপতি।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ, নাজমুল হক দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ কৃষকদের ভয়ভীতি ও নানা প্রলোভনের মাধ্যমে কম দামে জমি বিক্রি করতে বাধ্য করে আসছেন। সম্প্রতি পূর্ব লক্ষীপুর মৌজায় ৬১ শতক জমিতে তিনি ড্রেজার মেশিন দিয়ে আনুমানিক ৬০ ফুট গভীর খাদ তৈরি করেছেন। এতে আশপাশের জমিগুলো ধসে গিয়ে নদীভাঙনের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে এবং কৃষি উৎপাদনে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটেছে।
ভুক্তভোগী কৃষক ও জমির মালিকদের মধ্যে রয়েছেন ড. মোঃ শহিদ উল্লাহ, রবিউল হোসেন, আব্দুর রব, ছালেহ আহম্মদ, আব্দুল খালেক, মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, মোঃ সাগর হোসেন ও সফিকুর রহমান সোহাগ। তারা জানান, বহু বছরের শ্রমে অর্জিত জমিগুলো এখন চরম ঝুঁকির মুখে রয়েছে। কিছু জমি ইতোমধ্যে ধ্বসে পড়েছে, বাকিগুলো ফসল উৎপাদনের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
কৃষক রবিউল হোসেন, ছালেহ আহম্মদসহ জমির মালিকরা বলেন, “আমাদের জমিগুলো চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ফসল করার সাহস পাচ্ছি না। ফসলসহ জমি খাদে ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। যেখানে ফসল হতো, এখন সেখানে খাদ। কেউ যেন শুনছে না, দেখছে না। আমরা ধ্বংসপ্রাপ্ত কৃষিজমির সংরক্ষণ, ক্ষতিপূরণ এবং অভিযুক্ত ভূমিদস্যুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও জমির মালিকদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে লাকসাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত নাজমুল হক বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, “ভুল করে ফেলেছি। আমি জমি ভরাট করে দিতে চেয়েছিলাম। লেবার ঠিক করেছিলাম, কিন্তু বৃষ্টির কারণে কাজ করা সম্ভব হয়নি। ৬১ শতক জায়গায় সামান্য একটা পুকুর করেছি। অনেকে বিষয়টি বাড়িয়ে বলছেন।”
এ বিষয়ে লাকসাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাওসার হামিদ বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আশা, প্রশাসনের দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে তাদের কৃষিজমি ও জীবিকার সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে কেউ যেন এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সাহস না পায়- সেই পরিবেশও তৈরি হবে।