র্যাব সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে র্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার একটি দল অভিযান চালিয়ে ৮.৫ কেজি গাঁজা ও ৩০১ বোতল ফেন্সিডিলসহ ২ মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করে। ওইদিন কুমিল্লার কোতয়ালী মডেল থানার আমতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোঃ সোহেল (২৬) এবং মোঃ আমির হোসেন (৩১) নামে ২ মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৮.৫ কেজি গাঁজা, ৩০১ বোতল ফেন্সিডিল ও মাদক পরিবহণ কাজে ব্যবহৃত একটি কাভার্ড ভ্যান উদ্ধার করা হয়। জানা যায়, গ্রেফতারকৃত মোঃ সোহেল লক্ষীপুর জেলার রামগতি থানার চরমেহার গ্রামের আব্দুল মমিনের ছেলে এবং মোঃ আমির হোসেন নারায়নগঞ্জ জেলার সদর থানার সৈয়দপুর গ্রামের মোঃ রমজান আলীর ছেলে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরো জানায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে জব্দকৃত কাভার্ড ভ্যান ব্যবহার করে কুমিল্লার সীমান্তবর্তী এলাকা হতে মাদকদ্রব্য গাঁজা ও ফেন্সিডিল সংগ্রহ করে কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবীদের নিকট পাইকারি ও খুচরা মূল্যে বিক্রয় করে আসছে।
অপরদিকে, ২২ ডিসেম্বর দুপুরে র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর একটি বিশেষ দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বলদাখাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোঃ আব্দুল সালাম (২৮) নামে এক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছ থেকে ১৯৬ বোতল ফেন্সিডিল ও মাদক পরিবহণ কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, গ্রেফতারকৃত মোঃ আব্দুল সালাম খুলনা জেলার সোনাডাঙ্গা থানার নাজিরহাট গ্রামের দুলাল হোসেনের ছেলে। জিজ্ঞাসাবাদে সে আরো জানায়, দীর্ঘদিন ধরে জব্দকৃত প্রাইভেটকার ব্যবহার করে কুমিল্লার সীমান্তবর্তী এলাকা হতে ফেন্সিডিল সংগ্রহ করে কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবীদের নিকট পাইকারি ও খুচরা মূল্যে বিক্রয় করে আসছে।
এদিকে, ১৯ ডিসেম্বর অভিনব কৌশলে ব্যাটারী চালিত ভ্যানে করে মাদক পরিবহনকালে ৭২ কেজি গাঁজাসহ এক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করে র্যাব-১১ সিপিসি-২। ওইদিন রাতে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বেলতলী ইউনিভার্সিটি গেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোঃ সালাউদ্দিন (২৪) নামে এক মাদক কারবারিকে আটক করে র্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে ৭২ কেজি গাঁজা ও মাদক পরিবহন কাজে ব্যবহৃত একটি ভ্যান গাড়ি উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, মোঃ সালাউদ্দিন কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার শুভপুর গ্রামের মোঃ হোসেনের ছেলে। জিজ্ঞাসাবাদে সে আরো জানায়, দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লার সীমান্তবর্তী এলাকা হতে গাঁজা সংগ্রহ করে কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবীদের নিকট পাইকারি ও খুচরা মূল্যে বিক্রয় করে আসছে।
১৯ ডিসেম্বর অপর অভিযানে ১৪৬ বোতল ফেন্সিডিলসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়। ওইদিন কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার আমতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোঃ আলমগীর (৫১) ও মোঃ ছাব্বির হোসেন টুটুল (৩৫) নামে দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৪৬ বোতল ফেন্সিডিল ও মাদক পরিবহণ কাজে ব্যবহৃত একটি ট্রাক উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, গ্রেফতারকৃত মোঃ আলমগীর চট্টগ্রাম জেলার বন্দর থানার পূর্ব নিমতলা (দিয়ারবাড়ী) গ্রামের মৃত হাজী মোঃ ইউনুসের ছেলে এবং মোঃ ছাব্বির হোসেন টুটুল একই থানার পূর্ব নিকতলা (খয়রাতি মাঝির লেন) গ্রামের মোঃ হারুন অর রশিদের ছেলে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরো জানায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে জব্দকৃত ট্রাক ব্যবহার করে কুমিল্লার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ফেন্সিডিল সংগ্রহ করে কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবীদের নিকট পাইকারি ও খুচরা মূল্যে বিক্রয় করে আসছে।
গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর একটি দল কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার দেবিপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিনব কৌশলে মিনি পিকআপ ভ্যানের বডির ভিতরে গোপন প্রকোষ্ঠ বানিয়ে গাঁজা পরিবহণকালে মোঃ শাকিল হোসেন (২৬) নামে এক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছ থেকে ৬২ কেজি গাঁজা ও মাদক পরিবহণ কাজে ব্যবহৃত ১টি মিনি পিকআপ উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, গ্রেফতারকৃত মোঃ শাকিল হোসেন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার একবালিয়া (সর্দারবাড়ী) গ্রামের মোঃ বিল্লাল হোসেনের ছেলে। জিজ্ঞাসাবাদে সে আরো জানায় যে, দীর্ঘদিন ধরে জব্দকৃত মিনি পিকআপ কুমিল্লার সীমান্তবর্তী এলাকা হতে গাঁজা সংগ্রহ করে কুমিল্লাসহ অন্যান্য জেলায় মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবীদের নিকট পাইকারি ও খুচরা মূল্যে বিক্রয় করে আসছে। এছাড়াও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়াতে তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অভিনব কৌশল অবলম্বন করে মাদকদ্রব্য পরিবহণ করতো।
র্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার কোম্পানী অধিনায়ক লেঃ কমান্ডার মাহমুদুল হাসান জানান, র্যাব প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার, আইন-শৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব ফোর্সেস নিয়মিত ভাবে অভিযান পরিচালনা করে থাকে। জঙ্গি, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ডাকাত, মাদক ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন অপরাধীকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-১১, সিপিসি-২ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
তিনি বলেন, র্যাব-১১ এর মাদক বিরোধী ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়। মাদকের মতো সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে র্যাব-১১ এর অভিযান অব্যাহত থাকবে।