অনলাইন ডেস্ক: এবার ভেস্তে গেল বাংলাদেশকে চাপে রাখার ভারতীয় পেঁয়াজ নীতি! ভারতের পেঁয়াজ নীতি প্রতিবছর বাংলাদেশকে বিপাকে ফেলার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। যেমন আমেরিকার আছে উন্নত প্রযুক্তির মিসাইল, রাশিয়ার আছে অত্যাধুনিক অস্ত্র, সৌদি আরবের আছে তেল, আর ইরানের আছে ড্রোন- তেমনি ভারতের এ রাজনৈতিক অস্ত্র যেন পেঁয়াজ! বাংলাদেশে পেঁয়াজের ঘাটতি দেখা দিলেই দিল্লি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়, শুল্ক বসায়, কিংবা নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে। তবে এবার মোদির সেই চাল উল্টে দিয়েছে বাংলাদেশ।
ভারত প্রতিবছর পেঁয়াজকে একটি কৌশলগত অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র, সৌদি আরবের তেল বা ইরানের ড্রোনের মতোই ভারতের জন্য পেঁয়াজ একটি রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ভারত প্রায়শই পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ অথবা উচ্চ শুল্ক প্রয়োগ করে থাকে। এই নীতির মাধ্যমে তারা বাংলাদেশকে কাবু করতে চায়, বিশেষ করে যখন বাংলাদেশে পেঁয়াজের ঘাটতি দেখা দেয়।
এবার ভারতীয় পেঁয়াজের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে দেশীয় উৎপাদনের পাশাপাশি বিকল্প উৎসের দিকেও নজর দিয়েছে বাংলাদেশ। ফলে ভারতীয় পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ থাকলেও দেশে কোনো সংকট দেখা দেয়নি, বরং ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে তেমন একটা টিকছে না।
গত কয়েক বছরে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে তারা পেঁয়াজ রপ্তানি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে এবং পরবর্তীতে ২০% শুল্ক বসায়। কিন্তু অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের মজুদ বেড়ে যাওয়ায় এবং কৃষকদের চাপের মুখে ভারত সরকার এখন এই শুল্ক প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
বাংলাদেশের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ভারত প্রায়শই পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ অথবা উচ্চ শুল্ক প্রয়োগ করে থাকে। এই নীতির মাধ্যমে তারা বাংলাদেশকে কাবু করতে চায়, বিশেষ করে যখন বাংলাদেশে পেঁয়াজের ঘাটতি দেখা দেয়।
কিন্তু এবার বাংলাদেশ এই চক্র ভেঙে দিয়েছে। দেশটি ভারতীয় পেঁয়াজের ওপর নির্ভরতা কমাতে সফল হয়েছে। স্থানীয় উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি মিয়ানমার, তুরস্ক, মিশর এবং চীন থেকে বিকল্প উৎসে পেঁয়াজ আমদানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই বহুমুখী কৌশলের ফলে বাংলাদেশ এখন ভারতের পেঁয়াজ নীতির জিম্মি নয়! বরং, ভারতকেই এবার তার নীতি পরিবর্তন করতে হয়েছে।
বাংলাদেশের এই সাফল্য কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশটি শুধু পেঁয়াজের ঘাটতি মোকাবিলাই করেনি, বরং একটি স্থিতিশীল সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। এর ফলে, ভারতের পেঁয়াজ নীতি এখন আর বাংলাদেশের উপর প্রভাব ফেলতে পারছে না। এটি বাংলাদেশের কৃষি ও বাণিজ্য নীতির একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। ভবিষ্যতে ভারত যদি আবারও পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়, তবুও বাংলাদেশ এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। এই সক্ষমতা বাংলাদেশকে আঞ্চলিক বাণিজ্যে আরও শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছে।