নিজস্ব সংবাদদাতা: কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে পোমগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠিত হয়েছে। "শেকড়ের টানে উৎসব প্রাঙ্গণে" স্লোগানকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রাণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম বলেন, পোমগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে এসে আমি অভিভূত। এ জাতীয় অনুষ্ঠানগুলো আমাদের অতীতের স্মৃতিচারণের একটি মিলনমেলা।আজকের আয়োজন তারই একটি অংশ বিশেষ।
তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছর পার করলেও, আমরা দুর্নীতিমুক্ত ও উন্নত দেশের কাতারে আসতে পারিনি।আমাদের অনেক পরে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশ স্বাধীনতা লাভ করার পর সকল দিক থেকে আমাদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। তাই সকলের প্রচেষ্টার মাধ্যমে দূর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে আমরা বদ্ধপরিকর।
পোমগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন কমিটির আহবায়ক সাবেক সচিব ড. একেএম জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন, সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ড. আনোয়ার উল্লাহ, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ব্যারিষ্টার গোলাম সরওয়ার ভূঁইয়া, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়ছার, মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহরিয়া ইসলাম, মনোহরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বিপুল কুমার দে।
অনুষ্ঠানসূচির মধ্যে ছিলো- সকাল ৮টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশন, বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন, বর্ণাঢ্য আনন্দ র্যালী, বিদ্যালয়ের কীর্তিমান শিক্ষার্থীদের সম্মাননা পুরস্কার প্রদান, ব্যাচ ভিত্তিক ফটোসেশন, দুপুরের খাওয়া, ব্যাচ ভিত্তিক শিক্ষার্থী ও সাবেক শিক্ষকদের স্মৃতিচারণ, আমন্ত্রিত অতিথিদের বক্তব্য, শিক্ষার্থী ও দেশের খ্যাতিমান শিল্পীদের যৌথ আয়োজনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বক্তারা বলেন, পোমগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় বৃহত্তর অঞ্চলের একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আমাদের প্রাণের প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে 'শেকড়ের সন্ধানে শতবর্ষ মহিরুহ' স্লোগানে পোমগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন করা হয়। ১৯২৫ সালে জলিপুর গ্রামের জগৎ চন্দ্র দেহড়ীর উদ্যোগ ও অর্থায়নে এবং পোমগাঁও গ্রামের রামকুমার মল্ল বর্মনের বৈঠক খানায় তিনজন ছাত্র ও দুইজন পন্ডিত নিয়ে স্কুলটির পথচলা শুরু হয়। তাই আমরা সকল জায়গায় ফাউন্ডারদের ভূমিকা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে চাই। কেননা বিদ্যালয়টি বৃহত্তর অঞ্চলের সকল শ্রেণী পেশার মানুষের প্রাণের প্রতিষ্ঠান।
আয়োজকরা বলেন, আমাদের আজকের (বৃহস্পতিবার) আয়োজনটি বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে ৬/৭ মাস আগ থেকে কাজ করে আসছি। অনলাইনে রেজিষ্ট্রেশন করেছেন স্কুলের ২১০০জন সাবেক শিক্ষার্থী। সবমিলিয়ে প্রায় আড়াইহাজার ডেলিগেট আমাদের অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন করেন। এক্ষেত্রে অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করাসহ সকল সেক্টরে আলাদা আলাদা দায়িত্ব পালনে সংশ্লিষ্টরা ছিলো স্বচেষ্ট। বক্তারা বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে একজন মন্ত্রী, দুইজন সংসদ সদস্য ও দুইজন সচিবসহ অসংখ্য সাবেক শিক্ষার্থী দেশ-জাতির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন ও বর্তমানেও করে আসছেন।
বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সুজন ও মাইন উদ্দিনের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এস এম মুনসুর, মাসুদুল আলম বাচ্চু, শতবর্ষ উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব আবুল বাশার, অর্থ কমিটির আহবায়ক সলিম উল্লাহ, মনোহরগঞ্জ উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি মো.জসিম উদ্দিন, প্রকাশনা কমিটির আহবায়ক মো.আবদুল হাই,প্রাক্তন ছাত্র মো. শাহজাহান, সাংবাদিক আবুল খায়ের, মো. বেলাল হোসেন সোহেল, রমিজ উদ্দিন, হাফিজুর রহমান সায়মন প্রমুখ।