Featured

Type Here to Get Search Results !

চাঁদাবাজির মামলায় সফিউল্লার গ্রেপ্তারের সংবাদ প্রকাশ করায় লাকসামে সাংবাদিককে হুমকি

নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লার লাকসামে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার সফিউল্লার সংবাদ সংগ্রহ করায় এক সাংবাদিককে হুমকি দেয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার সফিউল্লার ভাই রায়হান সাংবাদিক মোঃ আবুল কালামকে ফেসবুক লাইভে ‘দেখে নেয়ার’ হুমকি দেন। এছাড়াও গ্রেপ্তার সংক্রান্ত ফেববুক স্ট্যাটাস শেয়ার করায় আরো কয়েকজনকেও দেখে দেয়া হুমকি দেন রায়হান। মোঃ আবুল কালাম জাগো লাকসাম সম্পাদক ও দৈনিক কালবেলা পত্রিকার লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। 

সাংবাদিক মোঃ আবুল কালাম জানান, ‘চাঁদাবাজির মামলায় শনিবার সন্ধ্যায় ডিবি পুলিশ পৌরসভা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক কসাই সফিউল্লাকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কুমিল্লা কার্যালয়ে নিয়ে যায়। মুহুর্তে এ খবর ছড়িয়ে পড়ে। এ ব্যাপারে অনেকের ফোন পেয়ে আমি সংবাদ সংগ্রহে নামি। বিস্তারিত তথ্য না পাওয়ায় ফেসবুকে তার গ্রেপ্তারের বিষয়ে একটি স্ট্যাটাস দেই। মুহুর্তের মাঝে আমার স্ট্যাটাসটি ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকেই পোষ্টটি শেয়ার করেন। নেটিজেনদের অনেকেই সফিউল্লার গ্রেপ্তারের সংবাদে খুশি হয়ে ‘আলহামদুলিল্লাহ, ধন্যবাদ, সুন্দর, নাইস’সহ নানা কমেন্টস করেন। ইত্যবসরে রাত ১১টার দিকে গ্রেপ্তার সফিউল্লার ছোট ভাই রেফায়েত হোসেন রায়হান তার ফেসবুক লাইভে আমার নাম ধরে এবং পোষ্ট শেয়ারকারীদের নাম ধরে ‘দেখে নেয়ার’ হুমকি দেন। এ বিষয়ে থানায় জিডি করা হয়েছে।’

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার হওয়া সফিউল্লার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, চুরি, ছিনতাইয়ের অভিযোগে অন্ততঃ ৭টি মামলা রয়েছে। 

লাকসাম হাউজিং এর কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দ নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে জানান, গত ৫ই আগস্টের পর লাকসামে কসাই খ্যাত মোঃ সফিউল্লাহ ও তার ছোট ভাই রায়হান লাকসাম হাউজিং ও আশপাশ এলাকায় ব্যাপক চাঁদাবাজিসহ নানা কুকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।

এছাড়াও তাদের দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে পতিত আ’লীগের দোসরদের টাকার বিনিময়ে আশ্রয়দান, হাউজিং এস্টেটের জায়গা দখল করে অফিস নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় লোকজন ওই অফিসকে ‘হাউজিং থানা’ বলে থাকেন। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত অবধি এ অফিসে তারা দুই ভাই শালিস দরবার, লোকজনকে আটক করে এনে মারধর ও অর্থ আদায়, মাদক কেনাবেচাসহ নারিদের এনে বাসাবাড়িতে রেখে দেহ ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগ করেন স্থানীয় লোকজন।

এ বিষয়ে কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী এনামুল হক ফারুক বলেন, ‘আমাদের সংবা‌দিকদের হুম‌কি ধমকি দিয়ে সত্য প্রকাশ থেকে বিরত রাখা যাবে না। সাংবাদিকদের হুমকিদাতাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্ত মূলক শা‌স্তির দা‌বি জানাই। না হয় সাংবা‌দিক সংগঠনগুলো কর্মসূ‌চি দিতে বাধ্য হবে।

লাকসামের সাংবাদিক নেতা অ্যাডভোকেট বদিউল আলম সুজন বলেন, অপরাধীর কোন দল নেই। কেউ হুমকি দিয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই।

লাকসামের অপর সাংবাদিক নেতা নুর উদ্দিন জালাল আজাদ বলেন, সন্ত্রাসীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।

লাকসাম পৌরসভা যুবদলের আহবায়ক মাহবুবুল হক মনু বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা পেলে ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের সাথে পরামর্শ করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সফিউল্লার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তারী পরোয়ানা ছিল। তাকে আজ (রোববার) আদালতে প্রেরণ করা হলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।

এ বিষয়ে, লাকসাম থানার ওসি নাজনীন সুলতানা বলেন, ফেসবুক লাইভে প্রকাশ্যে হুমকির ঘটনায় সাংবাদিক জিডি করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Top Post Ad

আলমাছ ষ্টীল এন্ড স্টান্ডার্ড ফার্ণিচার