Featured

Type Here to Get Search Results !

কুমিল্লায় প্রবাসীর বাড়ি হাতিয়ে নিতে জাল দলিল সৃষ্টির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লা মহানগরীর কান্দিরপাড়ের নজরুল এভিনিউ এলাকায় একটি সাততলা বাড়ি আত্মসাতের উদ্দেশ্যে জাল আম-মোক্তারনামা দলিল তৈরির অভিযোগ উঠেছে। প্রবাসফেরত আবদুল বারেকের নামে নিবন্ধিত ও ভোগদখলীয় ওই বাড়িটির আনুমানিক মূল্য প্রায় ১৫ কোটি টাকা।

ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সাতঘরিয়া গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে আবদুল বারেক দীর্ঘ ৩০ বছর কুয়েতে ছিলেন। প্রবাস জীবনের উপার্জিত অর্থে তিনি নজরুল এভিনিউ এলাকার বিএস-৩২০৩ ও ৩২১০ দাগে ১৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ জমি ক্রয় করে সেখানে একটি সাততলা ভবন নির্মাণ করেন। করোনাকালীন সময়ে দেশে ফিরে তিনি ওই বাড়িতেই বসবাস করছেন।

গত সোমবার এক দলিল লেখকের মাধ্যমে আবদুল বারেক জানতে পারেন- তার অজ্ঞাতে ঢাকা জেলার উত্তর শাহজাহানপুর এলাকার নুরুল ইসলাম খানের ছেলে আবু বকর ছিদ্দিককে ‘গ্রহীতা’ দেখিয়ে বাড়িটি আম-মোক্তারনামা দলিল করা হয়েছে। পরদিন আদর্শ সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে দলিলের নকল সংগ্রহ করে বিষয়টি নিশ্চিত হন তিনি।

আবদুল বারেক বলেন, “দলিল তৈরির দিন আমাকে কমিশন আদেশে অসুস্থ দেখানো হয়েছে। অথচ আমি সম্পূর্ণ সুস্থ, নিজ বাড়িতেই আছি। দলিলে আমার স্বাক্ষর, ছবি, আঙুলের ছাপ—সবই জাল। কথিত গ্রহীতাকে আমি কখনো দেখিনি।”

তিনি অভিযোগ করেন, দলিল লেখকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে- আদর্শ সদর উপজেলার ওমর ফারুক (সনদ নং ১০৪), কিন্তু দলিলে স্বাক্ষর করেছেন সদর দক্ষিণ উপজেলার আবদুল করিম (সনদ নং ৩৪)। খোঁজ নিয়ে তাদের কাউকে সংশ্লিষ্ট উপজেলায় পাওয়া যায়নি। 

তিনি আরো বলেন, “সাব-রেজিস্ট্রার দীপঙ্কর দাস অন্য উপজেলায় কর্মরত থাকলেও এই দলিলের দিন হঠাৎ এসে দায়িত্ব পালন করেন। ধারণা করছি, জাল দলিলচক্রই তাকে এই উপজেলায় এনে কাজে লাগায়"।

কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিস সহকারী গোলাপী রানী নাহা বলেন, “দলিলের দিন সাব-রেজিস্ট্রার স্যার (দীপঙ্কর দাস) দলিলের আগেই স্বাক্ষর করেন। পরে আমাকে আলেখারচর এলাকায় গিয়ে দাতার স্বাক্ষর আনতে বলেন। ছবি ও চেহারার অমিল দেখে আপত্তি জানিয়েছিলাম, কিন্তু গ্রহীতার লোকজন বলে ছবিটি পুরনো। তখন স্বাক্ষর নিয়ে ফিরে আসি।”

তিনি আরও জানান, দলিল সম্পাদনের সময় আসল দলিল লেখক উপস্থিত ছিলেন না; তার পক্ষে ‘লিমন’ নামের একজন এসেছিলেন।

দায়িত্ব পালনকারী সাব-রেজিস্ট্রার দীপঙ্কর দাস এ বিষয়ে বলেন, “দলিল জাল কিনা সেটা আদালতেই যাচাই হবে। কমিশনে সম্পাদিত দলিলের দায়িত্ব দলিল লেখক ও অফিস সহকারীর।”

অন্যদিকে নিয়মিত সাব-রেজিস্ট্রার লুৎফুন্নাহার লতা বলেন, “ঘটনার দিন আমি ছুটিতে ছিলাম। তবে বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হচ্ছে। ভুক্তভোগী আদালতের আশ্রয় নিতে পারেন।”

এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবার দ্রুত জাল দলিল বাতিল ও জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

Top Post Ad

আলমাছ ষ্টীল এন্ড স্টান্ডার্ড ফার্ণিচার