বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এমন রাজসিক বিদায় জানানো হয় কুমিল্লার লাকসাম পৌর শহরের লাকসাম পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা আলী আহমদকে। বিদায় সংবর্ধনা মঞ্চে তাঁকে দেওয়া হয় নানা উপহার। পরে ফুল দিয়ে সাজানো হুড খোলা গাড়িতে চড়িয়ে পৌঁছে দেওয়া হয় বাড়িতে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকমন্ডলী ও অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এ সময় তারা প্রিয় ধর্মীয় শিক্ষক আলী আহমদের নানা অবদানের স্মৃতিচারণ করেন। তারা বলেন, পাঠদানসহ বিদ্যালয়টির সার্বিক উন্নতিতে প্রিয় শিক্ষক আলী আহমদের অবদান ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। যা কোনদিন ভুলে যাওয়ার নয়। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় আগ্রহী করে তুলতে বিদ্যালয়ের পাশাপাশি বাড়িতে গিয়েও খোঁজ-খবর নিতেন। তিনি কখনো ক্লাসে দেরি করে যেতেন না। বরং ঘন্টা পড়ার আগেই ক্লাসের দরজায় হাজির হয়ে যেতেন।
বর্ণাঢ্য আয়োজনের জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিদায় সংবর্ধনায় আবেগাপ্লুত শিক্ষক আলী আহমদ বলেন, ১৯৯২ সালে যোগদানের পর দীর্ঘদিন শিক্ষকতা শেষে অবসরে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা, বিদ্যালয়ের উন্নয়নে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। এ কাজে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কমিটির সদস্য অভিভাবকরা আমাকে সহযোগিতা করেছেন। সবাই আমাকে যে সম্মান ও ভালোবাসা দিয়েছেন, তাতে আমি আনন্দিত, কৃতজ্ঞ।
এ সময় তিনি দীর্ঘ কর্মজীবনে ভুলত্রুটির জন্য সহকর্মীদের নিকট ক্ষমা চান।
সিনিয়র ধর্মীয় শিক্ষক আব্দুল মাবুদ বলেন, আলী আহমদ স্যার ও আমি ধর্মীয় শিক্ষক ছিলাম। আমাদের মাঝে কখনো বিবাদ হয়নি। বরং একে অপরের পরিপূরক ও সহযোগী হিসেবে কাজ করেছি। তাঁর অবসরে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা পূরণ হবার নয়। বিদ্যালয়ের পাঠদান থেকে শুরু করে সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে গেছেন। তাঁর অবদান ভোলার নয়।
প্রধান শিক্ষক ফারজানা নওশীন বলেন, বিদায় মানে চিরবিদায় নয়। যখন ইচ্ছা আপনি স্কুলে চলে আসবেন। আপনার জন্য সবসময় বিদ্যালয়ের দরজা খোলা থাকবে।
তিনি বলেন, শিক্ষক আলী আহমদ আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন তাঁর কর্মে। এ সময় তিনি এ গুণী শিক্ষকের সার্বিক মঙ্গল ও সুস্বাস্থ্য কামনা করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারজানা নওশীনের সভাপতিত্বে বিদায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র পাল, কোরবান আলী ভূঁইয়া, হাফেজ আবদুল মাবুদ, লক্ষন চন্দ্র আচার্য, সামসুল আলম প্রমুখ। এ সময় সহকারী শিক্ষক মোজাম্মেল হক মজুমদার, মাইনুল ইসলাম রাসেলসহ অন্যান্য শিক্ষক ও সাবেক শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।