মনোহরগঞ্জে বাদশা এলপিজি গ্যাস ফিলিং স্টেশন নিয়ে উত্তেজনা: আদালতে মামলা, পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে বিতর্ক
নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাতিমারা গ্রামে নির্মাণাধীন বাদশা এলপিজি গ্যাস ফিলিং স্টেশনে হামলা, শ্রমিকদের মারধর, চাঁদাবাজি, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন ফিলিং স্টেশনের মালিক মোঃ রফিকুল ইসলাম বাবুল।এই ঘটনায় অভিযুক্ত উপজেলা যুবদলের আহবায়ক রহমত উল্লাহ জিকুর সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যকে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক বলে দাবি করেছেন বাদী বাবুল।
২১ অক্টোবর কুমিল্লা আদালতে মামলা দায়েরের পর প্রিন্ট ও অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে অভিযুক্ত রহমত উল্লাহ জিকু তা অস্বীকার করে ২৫ অক্টোবর মনোহরগঞ্জ বাজারে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, বাদী রফিকুল ইসলাম বাবুল চুক্তিকৃত ভাড়ার টাকা পরিশোধ করেননি এবং জমির মালিক জায়গায় বেড়া দিতে গেলে সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়।
এ বিষয়ে বাদশা ফিলিং স্টেশনের মালিক রফিকুল ইসলাম বাবুল বলেন, “রহমত উল্লাহ জিকু সম্পূর্ণ মিথ্যাচার করেছেন। শালিসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি টাকা নিয়ে হাতিমারা শামীমের অফিসে যাই এবং জমির মালিক আলমগীরকে ফোন করি। তিনি প্রথমে আসবেন বলে জানান, পরে কুমিল্লায় আছেন বলে আসেননি। পরে বারবার অনুরোধ করলেও উদ্দেশ্যমূলকভাবে টাকা নিতে অস্বীকৃতি জানান। স্থানীয় ব্যবসায়ী কামালসহ অন্যদের এ বিষয়টি জানিয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমি ১৮ বছরের জন্য চুক্তিতে জায়গাটি ভাড়া নিয়ে ফিলিং স্টেশন স্থাপনে প্রায় ৫২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছি। কিছু কাজ বাকি রয়েছে, তারপরই ফিলিং স্টেশন চালু হবে। কিন্তু ব্যক্তিগত স্বার্থে যুবদলের আহবায়ক রহমত উল্লাহ জিকু ও তার সহযোগীরা আমাকে জায়গা না দেওয়ার হুমকি দেয় এবং ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। আমি প্রশাসনের কাছে এর সুষ্ঠু বিচার চাই।”
বাবুল আরও অভিযোগ করেন, “জিকু শুধু মিথ্যাচারই করেননি, তার মেয়ের জামাই, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ক্যাডার ও মামলার ১নং আসামি সোহান তার ফেসবুক আইডিতে আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে এবং ভূমিদস্যু বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”
উল্লেখ্য, গত ১৯ অক্টোবর বিকেল ৫টার দিকে হাতিমারা গ্রামে নির্মাণাধীন ‘মেসার্স বাদশা এলপিজি অটো গ্যাস অ্যান্ড ফুয়েল ফিলিং স্টেশনে’ হামলা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে ২১ অক্টোবর কুমিল্লা আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন স্টেশনের মালিক রফিকুল ইসলাম বাবুল।
অভিযোগে বলা হয়, স্টেশনের কাজ শুরু করার পর স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি তাতে বাধা দেন এবং নিয়মিত চাঁদা দাবি করেন।
ওইদিন বিকেলে উপজেলা যুবদলের আহবায়ক রহমত উল্লাহ জিকু (৫০), সোহান (২৭), মোঃ আবু বকর ছিদ্দিক আলমগীর (৫০), শ্রাবন (২৫), আবদুর রহিমসহ আরও ৭-৮ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি লাঠি, ছেনি ও হকিস্টিক নিয়ে স্টেশনে প্রবেশ করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামিরা শ্রমিকদের এলোপাতাড়ি মারধর করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। এরপর তারা স্টেশনের মূল্যবান যন্ত্রপাতি, ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম ও অফিসের আসবাবপত্র ভাঙচুর ও লুটপাট করে নিয়ে যায়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, হামলাকারীরা প্রায় ২০ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি ও ৫ লাখ টাকার ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম লুট করে এবং অফিসের আসবাবপত্র ভাঙচুরে আরও প্রায় ১ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে।
স্থানীয় লোকজনের চিৎকারে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
বাদী রফিকুল ইসলাম বাবুল বলেন, “আমি একজন ছোট ব্যবসায়ী। রহমত উল্লাহ জিকু, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ক্যাডার সোহানসহ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি আমার ব্যবসা বন্ধ করে দিতে চায়। আমি প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।”






.jpg)



